৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১০:৪৪

বেতাগীতে ৪ কোটি টাকার দরপত্রের লটারিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলা: লটারির কার্যক্রম স্থগিত

বরগুনার বেতাগী উপজেলায় ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতরের চার কোটি টাকার ১৮টি প্রকল্পের দরপত্রের লটারির সময় দুই গ্রুপ হামলা চালিয়েছে। পিআইও এইচ এম মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার লটারি নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় তা স্থগিত করা হয়েছে। এ হামলার ঘটনায় যুবলীগ নেতা এক ঠিকাদারের মাথা ফেটে গেছে ও অপর এক ঠিকাদার আহত হয়েছেন। বিষয়টির মীমাংসা না হওয়ায় আহত যুবলীগ নেতার বাবা জহিরুল হক নান্না বরগুনার দ্রুত বিচার আদালতে ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। বুধবার সকালে বিচারক মো: মাসুম বিল্লাহ মামলাটি আমলে নিলে বরগুনা পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগের ওপর তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এ মামলায় আসামিরা হলেন, বেতাগী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান কবীর, বেতাগী পৌরমেয়র ও বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম গোলাম কবির, বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মো: মাকসুদুর রহমান ফোরকান, আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মো: নজরুল ইসলাম, বেতাগী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: বাবুল আক্তার, আওয়ামী লীগ নেতা পিন্টু, সুজন সিকদার, রাজিব ও মোহসিন।
বেতাগীর পিআইও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৮টি প্রকল্পের কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয় গত মাসের শুরুতে। মঙ্গলবার দুপুরে ছিল এসব কাজের জন্য লটারির মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের নির্ধারিত দিন।
প্রত্যদর্শী কয়েকজন ঠিকাদার জানান, মঙ্গলবার দুপুরে এসব কাজের অনুকূলে লটারির অনুষ্ঠানে ঠিকাদারেরা উপস্থিত হন। এ সময় সেখানে উপস্থিত হন বেতাগীর পৌরমেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম গোলাম কবির ও বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান কবির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক মাকসুদুর রহমানসহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা। লটারি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কিছু আগে মেয়রের সমর্থক উপজেলা যুবলীগের কয়েকজন নেতা বেশ কয়েকটি কাজ লটারি প্রক্রিয়ার বাইরে তাদের জন্য সংরতি রাখতে পিআইওকে চাপ দেন। বরগুনা সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন ঠিকাদার এ ব্যাপারে প্রতিবাদ জানালে মেয়রের সমর্থক ঠিকাদারেরা তাদের ওপর হামলা চালান। এতে জাহিদুল ইসলাম মিঠুর মাথা ফেটে যায় ও রূপক নামের অপর এক ঠিকাদার আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত জাহিদুল ইসলাম মিঠুকে সন্ধ্যায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পৌরমেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বি এম গোলাম কবির অভিযোগ অস্বীকার করে নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা পিআইও অফিসে লটারিস্থলে উপস্থিত হলে বরগুনা থেকে আসা কয়েকজন ঠিকাদার এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করেন। তখন আমরা সেখান থেকে বের হয়ে আসি। শুনেছি স্থানীয় যুবলীগের কয়েকটি ছেলে কিছু কাজ দাবি করায় সেখানে উত্তেজিত কয়েকজন ঠিকাদার চেয়ার ও ইটের টুকরা ছুড়ে মারলে মিঠু নামের একজনের মাথায় আঘাত লাগে। আহত যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম মিঠু মাথায় আঘাত নিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মঙ্গলবার রাতে ভর্তি হয়েছে। তিনি জানান, ১৮ গ্রুপের কাজ লটারির সময় আসামিরা বলে আমাদের তিনটি কাজ বাইরে রেখে লটারি দিতে হবে। আমি প্রতিবাদ করলে পরিকল্পিতভাবে ত্রাস সৃষ্টি করে রামদা নিয়ে আক্রমণ করে।
বেতাগী থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, দরপত্র নিয়ে দুই পে একটু ঝামেলা হয়েছে। এতে একজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/194301