২৫ জুন ২০১৭, রবিবার, ১২:৩২

যানবাহনের ছাদ বোঝাই যাত্রী : দেখার কেউ নেই

উত্তরাঞ্চলীয় রংপুরের কাছে একটি মহাসড়কে আজ ভোরবেলা একটি মালবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে ১৬ জন নারীপুরুষ নিহত হয়েছে। নিহতরা প্রায় সবাই গার্মেন্টস শ্রমিক, ঈদের ছুটিতে তারা গ্রামে বাড়িতে যাচ্ছিল এবং কিছু অর্থ সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে মালবাহী ট্রাকটিতে চড়েছিল বলে জানা যাচ্ছে।

বাস-ট্রেনের ছাদে কিংবা পণ্যবাহী যানবাহনে চড়ে চলাচলের প্রবণতা নতুন নয়। বিশেষ করে ঈদের মতো উৎসবের মৌসুমে যখন বিভিন্ন গন্তব্যে মানুষের চলাচল অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, তখন এই প্রবণতাটা বেড়ে যায়, যার ফলাফল হিসেবে প্রায় প্রতিবছরই দেখা যায় ঈদের মৌসুমে এমন প্রাণঘাতী সব সড়ক দুর্ঘটনা।

রংপুরের পীরগঞ্জ থানার পুলিশ বলছে, শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে ঢাকা রংপুর মহাসড়কের কলাবাগান নামক স্থানে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ট্রাকের মালামালের উপর ২৫ থেকে ৩০ জন মানুষ বসে ছিল দূরপাল্লার যাত্রী হিসেবে, ট্রাক উল্টে গেলে এই মানুষগুলো সিমেন্টের বস্তায় চাপা পড়ে এবং ঘটনাস্থলে ১১ জন প্রাণ হারায়, হাসাপাতালে নেয়ার পর মারা যায় আরো পাঁচজন।

পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলছিলেন, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ট্রাকের আরো আটজন যাত্রী এখন ভর্তি রয়েছেন।

ঈদের মতো লম্বা ছুটির সময়টায় পরিবহন স্বল্পতার কারণে দূরপাল্লার যাত্রীদের পণ্যবাহী যানবাহনে ওঠানোর প্রবণতা নিয়মিতই দেখা যায়। গত কয়েকদিন ধরেই উত্তরাঞ্চল অভিমূখে যাওয়া প্রতিটি বাস ট্রেনেরই ছাদে বোঝাই যাত্রী থাকছে।

দেশে ঈদসহ বিভিন্ন বড় উৎসবের সময় যখন ঘরে ফেরা মানুষের সংখ্যা বেড়ে যায় তখন পরিবহণ খাতে এই অনিয়মগুলো প্রকট হয়ে দেখা দেয়। এমনকি দেখা যায় সরকারের পরিচালিত যানবাহণগুলোও অনিয়মটাকে প্রশ্রয় দেয়।

আজও বেশ কটি জাতীয় দৈনিকে এমন ছবি ছাপা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে সরাসরি রাষ্ট্র পরিচালিত ট্রেনগুলোতে পর্যন্ত ছাদে যাত্রী বোঝাই করে নেয়া হচ্ছে।

সড়ক পরিবহণমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অবশ্য আজ টেলিভিশনে দেয়া এক বক্তব্যে জনগণকে বাস ট্রেন বা লঞ্চের ছাদে না চলার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। একই আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির পুলিশ প্রধানও।

রংপুরের ওই দুর্ঘটনা কবলিত মালবাহী ট্রাকটিতে কেন যাত্রী তোলা হয়েছিল এবং দীর্ঘ যাত্রার মধ্যেও সেটা কেন কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ল না- তা খতিয়ে দেখতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

http://m.dailynayadiganta.com/detail/news/231194