২১ জুন ২০১৭, বুধবার, ৩:০৫

হবিগঞ্জে বাঁধে ফাটল, আতঙ্ক

টানা বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে নদীর তীর উপচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানির প্রবল চাপে বিভিন্ন স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে। গতকাল বেলা ১টায় নদীর পানি বিপদসীমার ২৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে আশঙ্কাজনকভাবে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর আগে মাইকিং করে শহরবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। রাতভর শহরের বিভিন্ন মসজিদেও মাইকিং করে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। এদিকে আতঙ্কিত হাজার হাজার মানুষ বাঁধ রক্ষায় রাতভর নদীর তীরে অবস্থান করেন। বাঁধের অনেক দুর্বল স্থানে নিজেদের উদ্যোগেই বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেন সাধারণ মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুর থেকে জেলায় প্রবল বর্ষণ শুরু হয়। পাশাপাশি প্রবল বর্ষণ হয় খোয়াই নদীর উৎপত্তি স্থল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। ফলে রোববার মধ্যরাতের পর থেকেই খোয়াই নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পায়। সোমবার সকালে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে। অপর একটি সূত্র জানায়, নদীর উজানে ভারতে নির্মিত বাঁধের পানি ছেড়ে দেয়ায় খোয়াই নদীতে বন্যা দেখা দেয়।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভাঙনের আশঙ্কায় রাতভর মানুষ তীর পাহারা দেন। রাত ৯টার পর থেকেই বাঁধের কয়েকটি দুর্বল স্থানে ছিদ্র হয়ে পানি শহরে প্রবেশ করতে শুরু করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরবাসীর মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। দোকানপাট বন্ধ করে মানুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেন। এদিকে দুর্বল স্থানগুলোতে সাধারণ মানুষ নিজেদের উদ্যোগে বালুর বস্তা ফেলে বাঁধের ছিদ্র বন্ধ করার চেষ্টা চালান। শহরের মসজিদগুলোতে মাইকিং করে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম জানান, শহররক্ষা বাঁধের তেতৈয়া, কামড়াপুর, শায়েস্তানগর ও মাছুলিয়া এলাকায় বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বেলা ১টায় শহরের মাছুলিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ২৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিনি বলেন, এর আগে খোয়াই নদীতে এতো পানি কখনো হয়েছে বলে আমার জানা নেই। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নদীর উজানে বৃষ্টিপাত কমেছে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=71012&cat=2/