১৪ জুন ২০১৭, বুধবার, ১২:০১

৯০৮ কোটি টাকায় ভিয়েতনাম থেকে কেনা হচ্ছে আড়াই লাখ টন চাল

সরকার টু সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ভিয়েতনাম থেকে কেনা হচ্ছে আড়াই লাখ টন চাল। এর মধ্যে দুই লাখ টন আতপ ও ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল। আতপ চাল কিনতে ৭১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও সিদ্ধ চাল কিনতে ১৯৫ কোটি পাঁচ লাখ টাকা লাগছে। গত ১১ই জুন সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আড়াই লাখ টন চাল কিনতে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে আলাদা দুটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতি টন আতপ চাল কিনতে ২৪ ডলার করে বেশি লাগছে। অন্যদিকে প্রতি টন সিদ্ধ চাল কেনা হচ্ছে ৪৩ ডলার বেশি দামে। হিসাব অনুযায়ী দুই লাখ টন আতপ চাল কিনতে সরকারের অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল কিনতে অতিরিক্ত লাগবে প্রায় ১৮ কোটি টাকা। খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জি টু জি ভিত্তিতে চাল আমদানির জন্য গত ২৮শে মে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভিয়েতনামের দূতের মাধ্যমে ভিয়েতনাম সরকারের প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর ভিত্তিতে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসে। তারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত নয় সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে জি টু জি পদ্ধতিতে চাল আমদানির চুক্তিনামার শর্ত এবং মূল্য নিয়ে আলোচনা ও নেগোসিয়েশন হয়। আলোচনা ও নেগোসিয়েশন শেষে দুই লাখ টন আতপ চাল প্রতি টন ৪৩০ ডলার দরে এবং ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল ৪৭০ ডলার দরে আমদানির সিদ্ধান্ত হয়। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম এগ্রিড মিনিটস অফ দ্য মিটিং স্বাক্ষর করে। খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ই মে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন আতপ চাল কিনতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এতে আতপ চালের সর্বনিম্ন মূল্য পাওয়া যায় প্রতি টন ৪০৬ দশমিক ৪৮ ডলার। ওই সময় মূল্যায়ন কমিটি বাজার দর যাচাই কমিটির দাখিল করা ভারত, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ডের উৎস দর থেকে প্রতি টন নন-বাসমতি আতপ চালের দাম নিচে থাকায় তা গ্রহণ করার সুপারিশ করে। বেশি দরে আতপ চাল কেনার যুক্তি উল্লেখ করে মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বর্তমানে সময়ের ব্যবধানে প্রতিদিন চালের দাম বাড়ছে। এছাড়া জিটুজি পর্যায়ে খাদ্যশস্য কেনার চুক্তি হলে তা সরবরাহ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা থাকে না। এজন্য প্রস্তাবিত চালের দর বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রয়েছে। এমন অবস্থায় দেশের চালের মজুদ সুসংহত এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় জরুরি সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ভিয়েতনাম থেকে জিটুজি পর্যায়ে চাল আমদানি করা একান্ত প্রয়োজন। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে আড়াই লাখ টন চাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদনের পরই ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তি হবে। চুক্তি অনুযায়ী ভিয়েতনাম কর্তৃপক্ষ এলসি খোলার ১৫ দিনের মধ্যে প্রথম শিপমেন্ট এবং ৬০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ চাল সরবরাহ করবে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=69865&cat=3/