বাংলাদেশের সংবিধানের শুরুতে এবং জাতীয় সংসদ ভবনে রয়েছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। সংবিধান ও সংসদে থাকলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরিতে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’ বাদ দেয়া হয়েছে।
সাত বছর পর প্রকাশিত ইবির বার্ষিক ডায়েরিতে এমনটি ঘটেছে। এ দিকে বিষয়টি আলোচনায় আসার পর দ্বায়ভার নিতে নারাজ প্রশাসন। ডায়েরি প্রকাশ কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘যে উক্তিটি দেয়া হয়েছে তা বর্তমান সরকারের স্লোগান। ইউজিসি থেকে পাঠানো কাগজপত্রে ওই বাক্যটি থাকে বলে আমরাও দিয়েছি। এ ছাড়া দেশের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরিও বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু হয় না।’ তবে আগামী দিনে প্রকাশিত ডায়েরিতে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী। তিনি বলেন, বিষয়টি মিস্টেকও হতে পারে।
বিগত বছরগুলোর ডায়েরি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ডায়েরির প্রথম পাতার শীর্ষে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম’ বাক্যটি লেখা রয়েছে। কয়েক পৃষ্ঠা পরেই রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত ডায়েরিগুলো বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু। ১৯৯৬ থেকে ২০০২ পর্যন্ত ডায়েরিতে বিসমিল্লাহ্ নেই। আবার ২০০২ থেকে ০৯ সাল পর্যন্ত ডায়েরিগুলো শুরু হতো বিসমিল্লাহ্ দিয়েই। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রকাশিত প্রথম ডায়েরিতে বিসমিল্লাহ্ নেই।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৮০ (৩৭) ধারা অনুযায়ী সেখানে বলা আছে, ‘ধর্মতত্ত্ব, ইসলামি শিক্ষা, তুলনামূলক আইনশাস্ত্র এবং অন্যান্য শিক্ষণ শাখাসমূহে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে শিক্ষা চর্চার ব্যবস্থা করা।’ বিসমিল্লাহ্ বাদ দিয়ে বর্তমান প্রশাসন আইনের এ ধারা অস্বীকার করেছে বলে দাবি করছেন শিক্ষকেরা।
এ দিকে প্রকাশিত ডায়েরির গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষকদের নামে সিনিয়রিটি অনুসরণ না করাসহ বিভিন্ন অসঙ্গতি। সিনিয়রিটি বিষয়ে তদন্ত কমিটিও গঠন হয়। তারপরেও ভুলসহ প্রকাশ করা হয় ডায়েরি। বিগত বছরগুলোতে প্রকাশিত ডায়েরিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য এবং প্রতিষ্ঠাতার নাম থাকলেও এবারের ডায়েরিতে তা নেই। জানা যায়, প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমান হওয়ায় ডায়েরিতে তার নাম দেয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয় বর্তমান সকরকারের আমলে। মূলত এ কারণেই সাত বছর কোনো ডায়েরি প্রকাশ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
মুদ্রণ কমিটির আহ্বায়ক ড. রাবিউল হোসেন বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোকে ডায়েরি প্রকাশের নির্দেশনা ছিল। আমরা শুধু অনুসরণ করেছি। যে উক্তিটি দেয়া হয়েছে তা বর্তমান সরকারের স্লোগান। ইউজিসি থেকে পাঠানো বিভিন্ন কাগজে ওই স্লোগানটি লেখা থাকে।’