২৬ মে ২০১৭, শুক্রবার, ১১:২২

আরো ২১ প্রাণ ঝরল সড়কে

দেশের বিভিন্ন এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গোপালগঞ্জের চেচানিয়াকান্দি এলাকায় মাইক্রোবাস ও ইজি বাইকের সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ মৃত্যু হয় ছয়জনের। এ ছাড়া চট্টগ্রামের চন্দনাইশে যাত্রীবাহী বাস ও দুটি পিক আপের মধ্যকার সংঘর্ষেও মৃত্যু হয় সাতজনের। এর বাইরেও ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ ও নান্দাইল, হবিগঞ্জের বাহুবল, কুমিল্লার দাউদকান্দি, নাটোরের বড়াইগ্রাম এবং চট্টগ্রামে আরেকটি পৃথক দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে—

গোপালগঞ্জ : শহরের চেচানিয়াকান্দি এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মাইক্রোবাস ও ইজি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরের এ ঘটনায় আহত হয়েছেন একজন। নিহতরা হলেন সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) দেলোয়ার হোসেন, ইজি বাইকের চালক আজাদ শেখ, বাস শ্রমিক মুজাহিদ, কুলসুম বেগম, সুমাইয়া খানম ও জেসমিন বেগম। তাঁদের বাড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায়। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান, পুলিশ সুপার (এসপি) সাইদুর রহমান খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি (তদন্ত) ওমর ফারুক বলেন, গতকাল দুপুরে মহাসড়কের চেচানিয়াকান্দিতে ঢাকা থেকে খুলনাগামী মাইক্রোবাসটির সামনের চাকা ফেটে যায়। এ সময় মাইক্রোবাসটির সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী ইজি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুটি গাড়িই দুমড়ে-মুচড়ে মহাসড়কের পাশে খাদে পড়ে গেলে এএসআই দেলোয়ার, আজাদ ও মুজাহিদ নিহত হন। গুরুতর অবস্থায় কুলসুম, সুমাইয়া, জেসমিন ও নিজামুলকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিন নারীকে মৃত ঘোষণা করেন। এএসআই দেলোয়ারের বাড়ি ফরিদপুরের নগরকান্দায়।

চট্টগ্রাম : মিনিবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে দুজন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নগরের বন্দর থানার কাস্টমস ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন রাকিব হোসেন ও আমজাদ হোসেন।

চন্দনাইশ : পুলিশ জানায়, বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারমুখী মালবাহী একটি পিক আপ যাত্রীবাহী আরেকটি পিক আপকে অতিক্রম করার সময় কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামমুখী যাত্রীবাহী একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ত্রিমুখী এই সংঘর্ষে পিক আপ দুটি দুমড়েমুচড়ে যায়। বাসেরও ক্ষতি হয়। দুর্ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলে এবং একজন হাসপাতালে। আহত হয় অন্তত ২৫ জন।

নিহতরা হলেন হাজেরা খাতুন (৬০), তাঁর নাতনি নয়ন তারা (৯), যাত্রীবাহী পিক আপের চালক আলামিন (৪০), মো. ফরিদ (৪৫), আবদুল মোতালেব (৬০), জহির উদ্দিন (৫৫) ও মনির আহমেদ (৫০)। আহতদের মধ্যে মোবারক খান (৩৫), রিয়া (১৭), আলমগীর (৩০), আনোয়ার হোসেন (৩৫), সাইফুল ইসলাম (২৫), নুরুল কবির (৪৫), আবু সৈয়দ (৫০), রমজান (৩০), তাহমিনা (২২), ফজলুল (২২), শফিক আহমেদ (২৫) ও হাসান আলীকে (২৮) স্থানীয় চন্দনাইশ ও দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে পাঠানো হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। হতাহতদের বিস্তারিত পরিচয় তাত্ক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন সড়কে পড়ে থাকায় মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। দেড় ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৫টায় মহাসড়ক থেকে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন সরিয়ে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার হারুয়া এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকটির চালকসহ আটজন আহত হয়েছেন। এ সময় সড়কটিতে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। এর আগে ভোরে একই সড়কের নান্দাইল উপজেলা পরিষদের সামনে গাড়িচাপায় অজ্ঞাতপরিচয় পথচারী মারা গেছে।

হবিগঞ্জ : ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেছে হোটেল শ্রমিক শামছুল ইসলামের। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মহাসড়কের বাহুবল উপজেলার কলেজ গেইট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘাতক ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) : ওজন নেওয়ার জন্য ট্রাককে থামার সংকেত দিয়েছিলেন টোলপ্লাজার নিরাপত্তারক্ষী মো. অলিউল্লাহ। কিন্তু সংকেত অমান্য করে তাঁর ওপর ট্রাকটি তুলে দেন চালক। এতে ঘটনাস্থলেই নিরাপত্তারক্ষী অলিউল্লাহর মৃত্যু হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি টোলপ্লাজায়।

নাটোর : বড়াইগ্রাম উপজেলার আলাদা স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রসহ দুজন নিহত এবং দুজন আহত হয়েছেন। গত বুধবার রাতে তিরাইল ও পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে কাছিকাটা এলাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন চঞ্চল হোসেন ও মোফাজ্জল হোসেন টিপু।

http://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2017/05/26/501560