২৩ মে ২০১৭, মঙ্গলবার, ৮:৪৮

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিটি স্ববিরোধী

|| ইকতেদার আহমেদ ||

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিটির সংক্ষিপ্ত নাম এনপিটি (নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি)। এটি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। এ চুক্তিটি প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্য পারমাণবিক অস্ত্র ও প্রযুক্তির বিস্তার রোধ এবং পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সহযোগিতা বাড়ানো। জাতিসঙ্ঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্বাক্ষরের জন্য ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে চুক্তিটি উন্মুক্ত করা হয় এবং এর দু’বছর পর ১৯৭০ সাল থেকে চুক্তিটি কার্যকর হয়। চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার পঁচিশ বছর পর ১৯৯৫ সালে এটিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো মিলিত হয় এবং চুক্তিটির কার্যকাল অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়াতে সম্মত হয়। অস্ত্র সীমিতকরণ ও নিরস্ত্রীকরণবিষয়ক অপর যেকোনো চুক্তির চেয়ে এ চুক্তিটির প্রতি অধিকসংখ্যক দেশ সমর্থন ব্যক্ত করায় এর মধ্য দিয়ে এ চুক্তিটির তাৎপর্য স্বীকৃতি পায়।
২০১৬ সাল অবধি ১৯১টি রাষ্ট্র চুক্তিটির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে। উত্তর কোরিয়া ১৯৮৫ সালে চুক্তিটির প্রতি সম্মতি জানালেও এটি মেনে চলার ব্যাপারে কখনো একনিষ্ঠ ছিল না বরং চুক্তিটির বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের মাধ্যমে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ পরবর্তী ২০০৩ সালে চুক্তিটি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। জাতিসঙ্ঘের চারটি সদস্য রাষ্ট্র কখনো পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিটিকে গ্রহণ করেনি। এ চারটি রাষ্ট্রের তিনটি যথা ভারত, ইসরাইল ও পাকিস্তানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে মর্মে ধারণা করা হয়। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ সুদান রাষ্ট্রটি পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে আজো যোগ দেয়নি।
চুক্তিটিতে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ বলতে যেসব দেশ ১৯৬১ সালের ১ জানুয়ারির আগে পারমাণবিক বোমা প্রস্তুত ও এর বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, সেসব রাষ্ট্রকে বুঝানো হয়েছে। এ রাষ্ট্রগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও চীন। অপর যে চারটি রাষ্ট্রকে পারমাণবিক শক্তিধর হিসেবে বিবেচনা করা হয় এর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়া প্রকাশ্যে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে মর্মে ঘোষণা দিয়েছে; পক্ষান্তরে ইসরাইল পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হওয়া বিষয়ে সুচিন্তিতভাবে দ্ব্যর্থক অবস্থান ব্যক্ত করে আসছে।
পারমাণবিক অস্ত্রধারী নয়, এমন দেশগুলো কখনো পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করবে না এ বিষয়ে সম্মত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশগুলো শান্তিপূর্ণ উপায়ে পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা হস্তান্তর এবং পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার চূড়ান্তভাবে অপসারণে নিরস্ত্রীকরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া বিষয়ে সম্মত হয়।
প্রতি পাঁচ বছর পরপর চুক্তিটি পর্যালোচনা করা হয়। পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিটি বাস্তবায়নকালীন পরবর্তী ২০ বছরের মধ্যে ২৫-৩০টি দেশ পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হওয়া বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হলেও ৪০ বছর পর দেখা গেল, পাঁচটি দেশ পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষরদান থেকে বিরত, যার মধ্যে চারটি দেশ পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হিসেবে ধারণা করা হয়।
পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি বিষয়ে সমালোচকদের অভিমত চুক্তিটি এক দিকে যেমন পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধে সক্ষম হবে না; অপর দিকে অনুরূপ তা অর্জনে আগ্রহী রাষ্ট্রগুলোকে প্রেরণা জোগানো থেকে নিবৃত্ত করবে না। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে সীমিত অগ্রগতি হওয়ার কারণে সমালোচকদের পক্ষ থেকে হতাশা ব্যক্ত করে বলা হয় স্বীকৃত পারমাণবিক অস্ত্রধারী পাঁচটি দেশের সম্মিলিত অস্ত্রভাণ্ডারে ২২ হাজারের অধিক পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ রয়েছে এবং এগুলো নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে তারা খুব একটা যে ইচ্ছুক তাদের কার্যকলাপে তা পরিলক্ষিত হয় না। অধিকন্তু জাতিসঙ্ঘের কিছু পদস্থ কর্মকর্তার অভিমত পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহার করে এমন দেশগুলোকে পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন থেকে বিরত রাখতে তাদের পদক্ষেপ মোটেই ফলপ্রদ নয়।
পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিটিতে প্রস্তাবনাসহ ১১টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। চুক্তিটির বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমতÑ এটি অন্তর্নিহিত ভারসাম্যবিশিষ্ট : ০১. পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ, ০২. নিরস্ত্রীকরণ এবং ০৩. পারমাণবিক প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহারÑ এ তিনটি স্তম্ভ সমন্বয়ে গঠিত। এ স্তম্ভগুলো একটি অপরটির সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং পারস্পরিক শক্তি বাড়াতে সহায়ক।
চুক্তিভুক্ত সদস্য দেশগুলোর সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের মধ্যে নিহিত রয়েছে একটি ফলপ্রদ বিস্তার রোধব্যবস্থা, যা এক দিকে নিরস্ত্রীকরণ অগ্রগতি বিষয়ে প্রয়োজনীয় ভিত রচনা করবে অপর দিকে পারমাণবিক অস্ত্রের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার বিষয়ে বৃহৎ সহযোগিতা সম্ভব করে তুলবে।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি এমন দেশের মধ্যে ভারত প্রথমত ১৯৭৪ সালে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং অতঃপর ১৯৯৮ সালে পুনঃবিস্ফোরণ ঘটায়। ধারণা করা হয়, ভারতের কাছে ১৫০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। ভারত যদিও পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ থেকে আক্রান্ত না হলে নিজে প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না এমন নীতিতে বিশ্বাসী; কিন্তু সম্প্রতি ভারতের প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টা অভিমত ব্যক্ত করেন, পারমাণবিক অস্ত্রধারী নয় এমন দেশ থেকে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে ভারত প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার নীতি মেনে চলবে। ভারতের প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টার এ বক্তব্য থেকে প্রতিভাত যে, তার প্রতিবেশী পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ পাকিস্তান বা চীন থেকে আক্রান্ত হলে রাষ্ট্র দু’টির বিরুদ্ধে প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে ভারত কোনোরূপ দ্বিধা করবে না। পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি বিষয়ে ভারতের বক্তব্য, এটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী এবং পারমাণবিক অস্ত্রধারী নয় এমন একটি বড় দলের সংগঠন, যা ১৯৬৭ সালের আগে যেসব দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তাদের আইনগতভাবে পারমাণবিক অস্ত্র সংরক্ষণের বৈধতা দেয়। কিন্তু কোন নৈতিক ভিত্তির ওপর এ ধরনের পার্থক্য সিদ্ধ তা চুক্তিটিতে স্পষ্ট নয়। ভারতের দাবি চুক্তিটিতে ভারত স্বাক্ষর না করার অর্থ এ নয় যে, পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধে ভারত অঙ্গীকারাবদ্ধ নয় বরং ভারত মনে করে চুক্তিটি ত্রুটিপূর্ণ এবং এটি সর্বজনীন অবৈষম্যমূলক যাচাই ও পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা সমর্থন করে না।
পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে দু’টি পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং ধারণা করা হয় দেশটির কাছে ১২০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। ভারতের মতো পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিটি বৈষম্যমূলক। পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি বিষয়ে পাকিস্তানের সুস্পষ্ট অবস্থান তার সাথে বিবাদে লিপ্ত ভারত পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হওয়ায় পাকিস্তানের নিজেকে সুরক্ষার অধিকার রয়েছে, আর তাই পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর দেশটির বিবেচনায় যথার্থ নয়। ২০১০ সাল অবধি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারত পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলে পাকিস্তানও চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেÑ এ কথাটি বলা হলেও পরে পাকিস্তান এ অবস্থান থেকে সরে এসে দাবি করে আসছে যে, তাকে পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হলেই কেবল দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।
ভারত ও পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হলেও দেশ দু’টির কোনোটিই পারমাণবিক সরবরাহকারী দেশের (এনএসজি) অন্তর্ভুক্ত নয়। এ দু’টি দেশ বিভিন্নভাবে এনএসজিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া বিষয়ে তৎপরতা চালালেও একটির ক্ষেত্রে চীন এবং অপরটির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র প্রধান বাধা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হিসেবে ইসরাইল নিজেকে স্বীকার না করলেও ধারণা করা হয় দেশটির অস্ত্রভাণ্ডারে ১০০-২০০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স ইসরাইলের হেফাজতে পারমাণবিক অস্ত্র থাকা বিষয়ে সব সময় নমনীয় অবস্থান ব্যক্ত করে আসছে। তাদের এ নমনীয় অবস্থানের সপক্ষে এ দেশটির নেতাদের যুক্তিÑ দেশটি বৈরী ও প্রতিকূল অবস্থানে থাকায় নিজের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার স্বার্থে আন্তর্জাতিক রীতিনীতির ব্যত্যয় ঘটলেও তাকে সহনীয় হিসেবেই দেখতে হবে।
২০০৫ সালের উত্তর কোরিয়া প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয় যে, তার হেফাজতে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। দেশটির দাবি, যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে তাকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে একঘরে ও পঙ্গু করতে তার মিত্রদের সাথে একাট্টাÑ এমন বাস্তবতায় আত্মমর্যাদা নিয়ে টিকে থাকতে হলে তার জন্য পারমাণবিক অস্ত্রধারী না হওয়ার বিকল্প নেই। দেশটি ইতোমধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের পাঁচটি সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা একদা নিজেকে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হিসেবে স্বীকার করেছিল এবং অতঃপর স্বীয় আত্ম্ােপলব্ধি থেকে এটি নিজের হেফাজতে থাকা সব পারমাণবিক অস্ত্র বিনষ্টের ঘোষণা দেয়। ঘোষণা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে দেশটির হেফাজতে থাকা সব পারমাণবিক অস্ত্র বিনষ্ট করা হয়।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হলেও দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণে সচেষ্টÑ যুক্তরাষ্ট্রের এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির ওপর দীর্ঘকালব্যাপী অর্থনৈতিক অবরোধ বলবৎ ছিল। দৃশ্যত এ অর্থনৈতিক অবরোধ দেশটিকে সামরিক সরঞ্জামের ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হতে আত্মপ্রত্যয়ী করে তুলেছে। ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার পরবর্তী দেখা গেল দেশটির হেফাজতে নিজস্ব প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত ও প্রস্তুত করা দেড় লক্ষাধিক অপারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যার একটি ক্ষুদ্র অংশ দেশটির চির বৈরী ইসরাইলকে সম্পূর্ণরূপে ধূলিস্যাৎ করে দিতে সক্ষম।
এনপিটি যেসব দেশ পারমাণবিক অস্ত্রধারী সেসব দেশ একটি নির্ধারিত সময়ান্তে তাদের সব পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংসের এবং যেসব দেশ পারমাণবিক অস্ত্রধারী নয় তাদের পারমাণবিক অস্ত্রধারী হতে নিবৃত্তের কথা বললেও চুক্তিটি স্বাক্ষর-পরবর্তী প্রায় ৫০ বছর অতিবাহিত হতে চললেও পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশগুলো আজো পারমাণবিক অস্ত্র উন্নীত করার প্রতিযোাগতায় লিপ্ত। পারমাণবিক অস্ত্রধারী নয় অথচ পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে এমন দেশ যথা ইরাক, লিবিয়া, আফগানিস্তান, সিরিয়া প্রভৃতি স্বীকৃত পারমাণবিক অস্ত্রধারী যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের দিয়ে যেভাবে আগ্রাসনের মুখোমুখি হয়ে চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে তা উত্তর কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তানের মতো পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হওয়ার শক্তি ও সাহস জোগায়। এ কথাটি অনস্বীকার্য যে, পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি একটি বৈষম্যমূলক চুক্তি। এ চুক্তিটি যে, পাঁচটি রাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে তার নৈতিক ভিত্তি বাস্তবতা বিবর্জিত। পারমাণবিক অস্ত্রধারী স্বীকৃত পাঁচটি রাষ্ট্রের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের কারণে ভবিষ্যতে ভারত, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আরো অন্ততপক্ষে ১০-১২টি রাষ্ট্র যে পারমাণবিক অস্ত্রধারী হতে সচেষ্ট হবে সে প্রশ্নে কোনো সংশয় নেই। সুতরাং স্বীকৃত এ স্ববিরোধী চুক্তিটিকে মানবতা ও বিশ্বশান্তির জন্য ফলদায়ক করতে হলে বিশ্বের সব রাষ্ট্রের একমাত্র চাওয়া হতে পারে স্বীকৃত ও স্বীকৃত নয় এমন সব পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশগুলোর হেফাজতে থাকা সব পারমাণবিক অস্ত্রের বিনষ্টীকরণ।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান,
রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
E-mail: iktederahmed@yahoo.com

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/222215