১৯ মে ২০১৭, শুক্রবার, ১০:৩৪

খেলাপি ঋণ ব্যাংকিং খাতের জন্য হুমকি

বিআইবিএমের কর্মশালায় বক্তারা

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, ব্যাংকিং খাতে ধারাবাহিকভাবে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। ২০১৩ সালে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশে। এভাবে খেলাপি ঋণ বাড়ার বিষয়টি ব্যাংকিং খাতের জন্য হুমকি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ‘ট্রেজারি অপারেশনস অব ব্যাংকস ২০১৬’ শীর্ষক এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। বক্তব্য দেন, বিআইবিএমের পরিচালক ড. শাহ মো. আহসান হাবীব, এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহমুদ হোসেন, দ্য সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক মইনুদ্দিনসহ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কর্মশালায় ইস্টার্ন ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান মেহেদি জামান, ব্যাংক এশিয়ার ট্রেজারি বিভাগের প্রধান আরিকুল আরেফিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০১৬ সালে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। যা আন্তর্জাতিক হিসাবের তুলনায় দ্বিগুণ। পুনঃতফসিল নীতিমালায় ছাড় দেয়ার কারণে খেলাপি ঋণ ব্যাপক হারে বাড়ছে। এ ছাড়া আরও কিছু কারণে ব্যাংকিং খাতের জন্য খেলাপি ঋণ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বক্তারা বলেন, খেলাপি ঋণ ব্যাংকিং খাতের দৈন্যদশার মূল কারণ। এ কারণেই ব্যাংক ঋণের সুদের হার এখনও নাগালের বাইরে। একই সঙ্গে ভালো ঋণগ্রহীতারা বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে ব্যাংকগুলোকে খেলাপি ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ তদারকি করতে হবে।
বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধূরী বলেন, খেলাপি ঋণ ব্যাংকিং খাতে সর্বনাশ ডেকে আনছে। এ অবস্থার উত্তোরণ না হলে পুরো ব্যাংকিং খাতের জন্য চরম খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। এ ধরনের ঋণের কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাংকগুলো ভালো গ্রাহকদের কাছ থেকে চড়া সুদ নিচ্ছে। এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহমুদ হোসেন বলেন, ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের আরও সতর্ক হতে হবে। সব ব্যাংকের প্রধানরা ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় বিশেষ নজর না দিলে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাত নিয়ে সরকার ঘন ঘন সিদ্ধান্ত বদলায়, যা এ খাতের জন্য মঙ্গলজনক নয়। সরকারের উচিত বছরের শুরুতেই এমন একটি নকশা তৈরি করা; যার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর সুফল বয়ে আসবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত দেশের ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৭৩ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা, যা ব্যাংকের মোট ঋণের ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আর গত বছরের মার্চে খেলাপি ঋণ ছিল ৫৯ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা।

http://www.jugantor.com/first-page/2017/05/19/125669/