২৯ এপ্রিল ২০১৭, শনিবার, ১০:১০

রমযান সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে

পবিত্র রমযান আসতে এখনও মাসখানেক বাকি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বসে নেই। একটার পর একটা পণ্যের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে তারা। আসন্ন রমযানকে কেন্দ্র করে মুদি পণ্য থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্যের দামে ঊর্ধ্বমুখী। বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে মুদি পণ্যের দাম আবারও বেড়েছে। রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। আর আয়োডিন লবনের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে ২৫-৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে সবজির দামও।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে পিঁয়াজ, রসুন, ডালের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচা সবজির দামও কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে।
বাজার বিশ্লেষণ ও ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যতালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া দেশি রসুন ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা। এছাড়া ভারতীয় রসুন কেজিতে ৩০ টাকা বাড়িয়ে ২৩০ টাকা দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম মানভেদে কেজি প্রতি ৩-৪ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৩২ টাকা দরে বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মুগ ডালের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা দরে; ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা। এছাড়া মাসকলাই ১৩৫ টাকা, ছোলার ডাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে মসুর ডালের দাম। গত সপ্তাহে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১২০ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা।
এছাড়া ভোজ্য তেলের দাম আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। ৫ লিটারের বোতল ব্র্যান্ড ভেদে ৫০০ থেকে ৫১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি লিটার ভোজ্য তেল ১০০ থেকে ১০৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লবণ কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকায়। দারুচিনি ১০ বেড়ে ৩৬০ টাকা, জিরা ৪৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ২০০ টাকা, লবঙ্গ ১৫০০ টাকা, এলাচ ১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদি ব্যবসায়ী মো. আমান বলেন, প্রতি বছরই রমযান মাস আসলে সবকিছুর দাম বাড়ে। কেন বাড়ে- তা বলতে পারবো না। তবে এখন বৃষ্টির কারণে কিছুটা দাম বাড়তি।
এদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচা পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সেব ধরনের সবজির দাম ৫-১০ টাকা হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া টমেটো ৩০-৪০ টাকা, সাদা বেগুন ৫০-৬০ টাকা, কালো বেগুন ৬০-৭০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, শশা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৪০-৫০ টাকা, চাল কুমড়া ৩০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাকরোল ৭০-৮০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কেজি প্রতি আলু ২০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি প্রতিটি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক আঁটি প্রতি ১৫ টাকা, লালশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকা এবং লাউশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন চাল এবং সারাদেশে বৃষ্টিপাতের অযুহাতে গত সপ্তাহেই প্রায় সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৫-৬ টাকা বাড়িয়েছিল ব্যবসায়ীরা। সেই আগের বাড়তি দামেই আজকের বাজারে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। কেজি প্রতি মোটা স্বর্ণা চাল ৪২ টাকা, পারিজা চাল ৪২-৪৩ টাকা, মিনিকেট ভালোটা ৫৫-৫৬ টাকা, মিনিকেট নরমাল ৫২ টাকা, বিআর২৮ ৪৬ টাকা, নাজিরশাইল ৪২-৪৮ টাকা, বাসমতি ৫৬ টাকা, কাটারিভোগ ৭৪-৭৬ টাকা, হাস্কি নাজির চাল ৪১ টাকা এবং পোলাও চাল ১০০ (পুরাতন), নতুন ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০-২০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৩০-১৮০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, প্রতিটি ইলিশ ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে; প্রতি কেজি ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ১৬০০ টাকা।
এছাড়া আগের বাড়তি দামেই গরুর গোশত প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, খাসির গোশত প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। এছাড়া লেয়ার মুরগি ১৮০, দেশী মুরগি ৪০০, পাকিস্তানী লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

http://www.dailysangram.com/post/281769-