২৩ এপ্রিল ২০১৭, রবিবার, ৮:৪২

মানবিকতা হারিয়ে যাচ্ছে : নির্যাতনের বীভৎস কাহিনী

বাংলাদেশের একশ্রেণীর মানুষ কি দিনের পর দিন পশু হয়ে উঠছে? তারা কি মানবিক গুণ সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলছে? নারীর প্রতি সম্মান দেখানো বাংলাদেশের মানুষদের একটি চিরায়ত ঐতিহ্য এবং বৈশিষ্ট্য। বিশেষ করে পর্দানশীনা নারীদেরকে সমাজ সব সময়ই আলাদা চোখে অর্থাৎ সম্ভ্রমের চোখে দেখে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে দেখা যাচ্ছে, মানুষরূপে একধরনের নর পশু নারীদের প্রতি সম্মান দেখানোর কোনো তোয়াক্কা করছে না। অসৎ পথে টাকা কামাইয়ের জন্য এরা অন্ধ হয়ে গেছে। বিবেক, মানবতা এবং নৈতিকতা এরা সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেছে। এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে গত ১৩ই এপ্রিল কক্সবাজারে। “দৈনিক কক্সবাজার” নামক একটি স্থানীয় দৈনিক গত ১৭ই এপ্রিল একটি খবর ছেপেছে। খবরটির শিরোনাম, ‘রিমান্ডে নিয়ে নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ’। খবরে বলা হয়েছে, জীবন আরা নামের এক নারীকে কক্সবাজার সদর থানায় নিয়ে গিয়ে শারীরিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানি করেছে এস আই মানস বড়ুয়া। ১৩ মার্চ রাতে রিমান্ডের নামে সদর থানায় নিয়ে গিয়ে ওই নারীর উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। জীবন আরার ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এস আই মানস বড়ুয়া জীবন আরার শরীরের বিভিন্নস্থানে বৈদ্যুতিক শক দিয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই নির্যাতিতা নারী। এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারসহ পুলিশ সদর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। পাশাপাশি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকেও লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করেছেন তিনি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২ মার্চ এসআই মানস বড়ুয়া জীবন আরা ও তার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় আটক করে। তার ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ ঢাকার পশ্চিম উত্তরার কামালপাড়ার সিরাজুল হকের স্ত্রী সীমা আক্তারের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সেদিন তাদের দুজনকে ইয়াবাসহ আটক দেখায় পুলিশ। এরপর তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। জেল হাজতে পাঠানোর দশদিন পর তাকে রিমান্ডে আনা হয়। রিমান্ডের দিন এসআই মানস তার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। সেই টাকা তিনি দিতে অস্বীকার করলে এসআই মানস তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে।
এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত জীবন আরা জানান, এস আই মানসের নির্যাতনের বর্ণনা দেয়ার ভাষা তার জানা নেই। পুলিশ যে কতটা পাষণ্ড ও বর্বর হতে পারে তার উদাহারণ মানস। তিনি এখনো মানসের নির্যাতনের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন। নির্যাতিত নারী জানান, আটকের দিন পুলিশ তার বাসা থেকে ব্যাংক চেক, স্বর্ণালংকার ও একটি প্রাইভেট কার নিয়ে আসে। বর্তমানে সেসব জিনিসের হদিসও তার জানা নেই।
তিনি আরো জানান, কারাগার থেকে বের হয়ে নির্যাতনের বিরুদ্ধে সঠিক বিচার পেতে সহায়তার জন্য তিনি ঝাউতলা নারী কল্যাণ সমিতিতে যান। সেখান থেকে কথা বলে ফেরার পথে পুলিশ আবারও তার উপর হামলা করে। ওই সময় নুনিয়ারছড়া এলাকায় ইট দিয়ে পিটিয়ে তার দেবরের পা ভেঙ্গে দেয় এসআই মানস।
তিনি আরো জানান, ওই নারী শরীরের সর্বত্র ক্ষতের চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন। তাই তার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে নারী কল্যাণ সমিতি প্রয়োজনে রাস্তায় নামবে।
কক্সবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী জানান, এক নারী এস আই মানসের হাতে নির্যাতিত হয়েছে বলে জেলা পরিষদে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। তার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি কাজ করছেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল জানান, এসআই মানসের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন। সমস্ত প্রমাণাদি নিয়ে ২১ এপ্রিল পুলিশ সুপার কার্যালয়ে দেখা করার জন্য নির্যাতিত ওই নারীকে বলা হয়েছে।
॥ দুই ॥
নির্যাতিতা পর্দানশীনা এই নারী থানার এসআই মানস বড়ুয়ার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তিনি তার বিরুদ্ধে ভয়াবহ যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। গত মঙ্গলবার স্থানীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সন্মেলনে নারী উদ্যোক্তা জীবন আরা এসব গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেন। ১৮ই এপ্রিল দৈনিক যুগান্তরে তার এসব অভিযোগ সবিস্তার প্রকাশিত হয়। যুগান্তরে প্রকাশিত খবরটি নিম্নরূপ,
“নারী উদ্যোক্তাকে রিমান্ডে নিয়ে দাবি করেছিলেন ৩০ লাখ টাকা। আর তা দিতে অস্বীকার করায় বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয় তার স্তন ও গোপনাঙ্গে। এতে অজ্ঞান হয়ে গেলেও শরীরের আরও কয়েক স্থানে দেয়া হয় গরম তারের ছ্যাঁকা। এভাবে রিমান্ডের নামে নির্যাতনে মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছেন কক্সবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানস বড়ুয়া।
মঙ্গলবার কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিজের ওপর ঘটে যাওয়া এসব দুঃসহ স্মৃতি বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন নারী উদ্যোক্তা জীবন আরা। তিনি বলেন, কক্সবাজার শহরতলীর লিংকরোডস্থ নিজস্ব পাকা ভবনের দ্বিতীয় তলায় অন্য দিনের মতো ব্যবসায়ী স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। মাঝ রাতে পুলিশ তাদের ডেকে বাড়িতে ঢুকে। কিছু বুঝে উঠার আগেই বাড়ি তল্লাশির কথা বলে সবাইকে চোখ বেঁধে এক কোণে বসিয়ে রাখা হয়। এরপর এক পুলিশ বলে উঠে ‘স্যার, ইয়াবা পাওয়া গেছে।’
জীবন আরা বলেন, বাড়িতে ইয়াবা পাওয়ার কথা বলে স্বামী আলী আহমদ সওদাগর ও তাকে রাতে থানায় এনে হাজতে রাখা হয়। তাদেরকে আনার সময় পুলিশ বাসা থেকে ব্যাংক চেক, স্বর্ণালংকার ও একটি প্রাইভেট কারও নিয়ে যায়। কিন্তু সিজার লিস্টে গাড়িটি জব্দের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়নি। স্বামী স্ত্রীকে তিন দিন থানা হাজতে রেখে মাদক মামলায় জীবন আরাকে এক নাম্বার আসামী করে চালান দেয়া হয়। এই নারী উদ্যোক্তা দাবি করেন, কারাগারে নেয়ার ১০ দিন পর রিমান্ডের নামে তাকে থানায় এনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মানস বড়ুয়া প্রথমে তার স্বজনদের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মধ্যযুগীয় কায়দায় তার স্তন ও গোপনাঙ্গে বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয়। এতে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। জ্ঞান ফেরার পর দেখেন শরীরের আরও কয়েক স্থানে ছ্যাঁকায় ফোস্কা পড়েছে। তিনি বলেন, এ অবস্থায় তাকে কারাগারে দিয়ে আসা হয়। বিনা চিকিৎসায় থাকায় বৈদ্যুতিক শকের ক্ষতস্থান থেকে পচা গন্ধ বের হলে কারা কর্তৃপক্ষ পরে সদর হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের নথিতে বৈদ্যুতিক শকের কথা উল্লেখ করেছেন।
জীবন আরা বলেন, এসব কথা উল্লেখ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতে জামিন চাওয়া হয়। আদালত নারী কর্মকর্তা দিয়ে চেকআপ করার পর তথ্যের সত্যতা পেয়ে অবশেষে জামিন দেয়। তিনি বলেন, এরপর কোথাও কোনো অভিযোগ কিংবা কিছু করা হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে কড়া নজরদারি বসায় পুলিশ। কক্সবাজার হাসপাতালে পুলিশ বার বার হয়রানি করছে দেখে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নির্যাতিতা এই নারী উদ্যোক্তা বলেন, চমেকে তার শারীরিক অবস্থা দেখে তাকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, যথাযথ চিকিৎসা না পেলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন তিনি।
তিনি বলেন, কারাগার থেকে বের হয়ে নির্যাতনের বিচার পেতে সহায়তার জন্য শহরের ঝাউতলা নারী কল্যাণ সমিতিতে যান তিনি। সেখান থেকে ফেরার পথে পুলিশ আবার তার ওপর হামলা চালায়। ওই সময় নুনিয়ারছড়া এলাকায় ইট দিয়ে পিটিয়ে তার দেবর জাহাঙ্গীরের পা ভেঙে দেন এসআই মানস। জীবন আরা আরও জানান, সদর থানা পুলিশের পরিকল্পনায় এসআই মানস বড়ুয়ার অমানবিক নির্যাতনের বিষয় উল্লেখ করে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারসহ পুলিশ সদর দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকেও।
এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন নির্যাতিতা এই নারী উদ্যোক্তা। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, ‘একজন নারীকে আমার এক এসআই কর্তৃক নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তদন্ত করছেন।’ তিনি বলেন, উভয়ের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
॥ তিন ॥
গত ২১ এপ্রিল শুক্রবার এব্যাপারে ইংরেজি “ডেইলি স্টারের” প্রথম পৃষ্ঠায় একটি খবর প্রকাশিত হয়। খবরটির শিরোনাম “Inhuman torture in custody”/Woman sues SI, probe opens. খবরে বলা হয়েছে যে, জীবন আরা নাম্নী এক মহিলা কক্সবাজার থানার সাব ইন্সপেক্টর মানস বড়–য়ার বিরুদ্ধে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরফুল হক টুটুলকে অভিযোগের তদন্ত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ দাখিলের জন্য জীবন আরাকে থানায় আসার জন্য বলা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, তদন্ত হবে নিরপেক্ষ এবং তদন্ত প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডেইলি স্টারের আলোচ্য রিপোর্ট মোতাবেক এর আগে এস আই মানস বড়–য়া জীবন আরা ও তার স্বামীকে ইয়াবা রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করে। হাজতে তার ওপর নির্যাতনের অভিযোগটি তদন্ত করেন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না। তার রিপোর্টের ভিত্তিতে কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ ২৩ শে মার্চ জীবন আরাকে জামিন দেন। ঐ রিপোর্ট অনুযায়ী মুক্তির পর কক্সবাজার সদর হাসপাতালে জীবন আরাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরবর্তীতে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। সেখানকার মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা যায় যে, তার স্তন এবং যৌনাঙ্গে ইলেক্ট্রিক শকের আঘাত রয়েছে।
গত বুধবার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজের আদালতে জীবন আরা দুইটি মামলা দায়ের করেন। একটি হলো তার ওপর শারীরিক নির্যাতন ও ঘুষ দাবি, আরেকটি হলো নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনের অধীনে মামলা। আজকের লেখাটি শেষ করছি দুইট নৃশংস খুনের ঘটনা দিয়ে। বছর খানেক আগে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে পিতা এবং কন্যার চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড ঘটে। সেই নৃশংস জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই। মায়ের পরকীয়া দেখে ফেলায় প্রেমিককে দিয়ে স্বামী ও মেয়েকে হত্যা করিয়েছে এক কুলটা রমণী। পুলিশের তদন্তে সেটি উদঘাটিত হয়েছে।
সিলেট পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআইর বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম মল্লিক। তিনি জানান, গত বছরের ৮ আগস্ট কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার একটি হাওরে পাওয়া যায় পুটামারা এলাকার আবদুস সালাম ও তার মেয়ে রুলি বেগমের লাশ। চাঞ্চল্যকর এ মামলার রহস্য উদঘাটনের কাজ শুরু করে পিবিআই। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ জানতে পারে, মামলার বাদী রুশনা বেগমের সঙ্গে একই এলাকার মখন মিয়ার পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। মেয়ে রুলি তা দেখে ফেলায় মেয়ে ও বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মা। ৮ আগস্ট স্বামী আবদুস সালাম ও মেয়ে রুলি বেগম নৌকাযোগে বাজার থেকে ফেরার পথে মখন ও তার সহযোগীরা ‘টাইয়াপাগলা’ নামের হাওরে তাদের হত্যা করেন। এ ঘটনায় পিবিআই ১০ এপ্রিল রুশনা ও মখনকে আটক করে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে খুনের কথা স্বীকার করেছেন। শিগগিরই এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হবে বলে জানিয়েছে পিবিআই।
আমরা শুরু করেছিলাম এই মন্তব্য দিয়ে যে, আমরা কি দিন দিন মানবতা, নৈতিকতা ও বিবেক বিসর্জন দিয়ে নর পশুতে পরিণত হচ্ছি? ওপরের যে কটি ঘটনার উল্লেখ করা হলো সেসব ঘটনা এই কথাই প্রমাণ করে। এখনো ব্যবসায়িক নুরুল ইসলাম হত্যার কাহিনী নিয়ে পত্রপত্রিকায় বিস্তর লেখা লেখি চলছে। সেখানেও দেখা যায় যে, সুমি বেগম শাহাবুদ্দিন নাগরী নামের এক কাস্টমস অফিসারের সাথে পরকীয়া করে দুজনে মিলে স্বামী নুরুল ইসলামকে হত্যা করেছে। এই ধরনের কাহিনী আরো আছে। আমাদের প্রশ্ন, অনেক ব্যাপারেই তো সরকার কঠোর হয়। এ ধরনের ক্রাইমের ঘটনায় সরকার কি সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করতে পারে না? জনগণকে এসব বর্বর ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। একই সঙ্গে অপরাধী হোক বা পুলিশ হোক, সকলের বিরুদ্ধেই আইন মোতাবেক সবচেয়ে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
Email: asifarsalan15@gmail.com

http://www.dailysangram.com/post/280911-