২১ এপ্রিল ২০১৭, শুক্রবার, ৮:৩৮

বিআরটিএ’র ভাড়ার তালিকা মানছে না পরিবহণ মালিকরা

রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস আগের রুপে ফিরেছে। তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ঘোষণা অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত ভাড়া না নিয়ে ইচ্ছেমতো আদায় করছে পরিবহণ শ্রমিকরা। নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা কার্যকরে বিআরটিএর কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। তাই যাত্রীরাও বাধ্য হয়েই পরিবহণ শ্রমিকদের জাহিদা অনুযায়ী ভাড়া দিচ্ছেন। যাত্রীরা বুঝে গেছেন প্রতিবাদ করেও লাভ হবে না। 

গত বুধবার সিটিং সার্ভিস বন্ধে ঘোষণার চারদিনের মাথায় বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো.মশিয়ার রহমান ঘোষণা আপাতত আগামী ১৫ দিন সিটিং সার্ভিস চলবে। এ সময়ে বিআরটিএর ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও বাম্পার রাখার বিরুদ্ধে অভিযানও বন্ধ থাকবে। তবে সিটিং সার্ভিসে সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুসরণ করতে হবে গাড়ি মালিকদের। ভাড়া অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা তা তদারকি করবে বিআরএির ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একেক বাস ভাড়া আদায় করা হচ্ছে একেক রকম। কোনো বাসেই পাঁচ টাকার টিকিট নেই, যাত্রাবাড়ী থেকে রাজধানীর উত্তর ও পশ্চিম অংশে চলাচলকারী বাসগুলোতে সর্বনিম্ন ভাড়া নেয়া হচ্ছে ১০ টাকা। চিটাগাং রোডের সাইনবোর্ড থেকে ঢাকা মেডিকেল পর্যন্ত ঠিকানা পরিবহনে ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা। সাইনবোর্ড থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের কাজলা থেকেও নেয়া হচ্ছে একই ভাড়া। যাত্রাবাড়ী থেকে মিরপুর-১২ পর্যন্ত চলাচলকারী খাজাবাবা পরিবহনে জয়কালী মন্দির থেকে শাহবাগ পর্যন্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। আগের দিনও যা ছিল ১০ টাকা। এত ভাড়া কেন জানতে চাইলে চালকের সহকারী হেসে দিয়ে বলেন, আবার সিটিং হইয়া গেছে। সিটিং চালালেও তো নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নেয়া যাবে না- এমন মন্তব্যের জবাবে সহকারী বলেন, কে বলছে, সিটিং চালামু, তো ভাড়া তো বেশি নিমুই।
জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত কোথাও লোক তোলার কথা না। কিন্তু বাসটি মৎস্য ভবন মোড়, শাহবাগ মোড়, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের সামনে, শেরাটন সিগন্যাল, পরীবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার-প্রতিটি মোড়েই যাত্রী তোলার জন্য ডাকাডাকি করেছে। অর্থাৎ লোকাল হিসেবে চলেই বাসটি ভাড়া নিয়েছে সিটিং এর।
ওয়েলকাম পরিবহনে ফার্মগেট থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত গেলে ভাড়া দিতে হয় ২০ টাকা। আবার কল্যাণগেটের কলেজ গেটে নামলেও নেয়া হচ্ছে একই ভাড়া। সময় ও মঞ্জিল পরিবহনে সর্বনিম্ন ভাড়া হওয়ার কথা পাঁচ টাকা। কিন্তু তাদের টিকিটের দাম নূন্যতম ১০ টাকা। উত্তর বাড্ডা থেকে মেরুল বাড্ডা পর্যন্ত এক কিলোমিটারের ভাড়া অনাবিল পরিবহনে নেয়া হয়েছে ১০ টাকা। আগের দিনও যা ছিল পাঁচ টাকা।
আজিমপুর থেকে থেকে গাজীপুর পর্যন্ত চলা ভিআইপি ২৭ নম্বরে সর্বনিম্ন টিকিট রাখা হচ্ছে ৩০ টাকা। যদিও যাত্রী না থাকলে প্রতিটি স্টপেজেই সেগুলো ডাকাডাকি করে। নিউমার্কেট থেকে চলা মিরপুর-১২ পর্যন্ত চলা সেফটি পরিবহন সর্বনিম্ন ভাড়া নিচ্ছে ১০ টাকা। লোকাল হিসেবে চলা মিনিবাসেও ভাড়া নেয়া হচ্ছে সর্বনিম্ন সাত টাকা। যদিও এই ভাড়া বড় মাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
মতিঝিল থেকে সাভার পর্যন্ত চলা ওয়েলকাম পরিবহনে কল্যাণপুর থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত ভাড়া ১৫ টাকা, একই বাসে শাহবাগ নামলেই ভাড়া দিতে হবে ২৫ টাকা। এই ভাড়ায় যাওয়া যাবে মতিঝিল পর্যন্ত।
নিউ ভিশন, মিরপুর-২ নম্বর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভাড়া ৩০ টাকা। কারওয়ানবাজার পর্যন্ত আসা যায় ১৫ টাকায় অথচ এক কিলোমিটার দূরে বাংলামোটর আসলেই দিতে হবে ২৫ টাকা।
বেশী ভাড়া আদায় প্রসঙ্গে বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোহরা খাতুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে। অনেকেই অমান্য করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

http://www.dailysangram.com/post/280612-