হজ্ব ব্যবস্থাপনায় বিশৃংখলা চরমে পৌঁছেছে। নির্ধারিত কোটার বাইরে সিরিয়াল পড়ায় এবার হজ্ব করতে পারছেন না ৭৭ হাজার বাংলাদেশী হজ্বযাত্রী। এজেন্সিগুলো নিবন্ধন বর্জন করায় বেসরকারি হজ্ব¡যাত্রীদের নিবন্ধন করা হয়নি। এ অবস্থায় হজ্ব¡যাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। এজেন্সিসমূহের অফিসে হজ্বযাত্রীরা ভিড় করছে এবং এজেন্সিদের প্রতি চাপ সৃষ্টি করছে। এজেন্সি মালিকদের মধ্যেও বিরাজ করছে চরম অস্বস্তি।
সূত্রমতে, এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮জন হজ্ব¡যাত্রী হজ্ব¡ করতে পারবেন। তার মধ্যে সরকারি ব্যবস্থায় ১০ হাজার ও বেসরকারি ব্যবস্থায় ১ লাখ ১৭ হাজার ১৯৮জন। কিন্তু বেসরকারি ব্যবস্থায় প্রাক- নিবন্ধন হয়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৫জন। প্রায় ৭৭ হাজারের বেশী হজ্বযাত্রী এবার হজ্ব করতে পারবে না। সিরিয়ালের বাইরে থাকায় তারা এবার হজ্ব করতে পারছে না। বেশকিছু এজেন্সির প্রায় সব হজ্বযাত্রীই কোটার বাইরে পড়েছে।
এদিকে গত সোমবার পর্যন্ত নিবন্ধন করার শেষ সময় ছিল। কিন্তু হজ্ব এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর নিবন্ধন করার কারণে এজেন্সিগুলো নিবন্ধন করেনি। আগামী ২৭ এপ্রিল হজ্বযাত্রীর নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য সৌদি আরবে জানাতে হবে বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছে। এ অবস্থায় এজেন্সিগুলো হজ্বযাত্রীদের নিবন্ধন না করলে কেউই এবার হজ্ব¡ করতে পারবে না। কিন্ত হাবের পক্ষ থেকে নিবন্ধন করার সম্মতি না দেয়ায় সরকারও সময় বৃদ্ধি করেনি। আজ বৃহস্পতিবার সময় বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধিত হজ্বযাত্রীগনের নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ১৫ এপ্রিল বিকেল ৫টা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু বেসরকারী ব্যবস্থাপনার হজ্বযাত্রীদের নিবন্ধনের সময়সীমা বৃদ্ধির বিষয়ে কোন ধরনের সিদ্ধান্ত হয়নি। মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার আগেই নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
হজ্বযাত্রীর কোটা বৃদ্ধি করা ও কোটা সমহারে বন্টনের দাবি জানিয়েছে হজ্ব¡ এজেন্সিদের সংগঠন হজ্ব এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। অথবা ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার সময় অনুযায়ী সিরিয়াল করার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে হাব। কিন্তু এতে করে বর্তমানে কোটার অর্ন্তভূক্ত হজ্বযাত্রীরা কোটার বাইরে চলে যাবে। এতে নতুন করে বিশৃংখলা সৃষ্টির আশংকা রয়েছে। আর এতে করে কিছু সংখ্যক নেতারা সুবিধা পাবেন বলে সাধারণ এজেন্সি মালিকদের আশংকা। এসব বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত হবে হাবের বিশেষ সাধারণ সভা। এ সভা আজ উত্তপ্ত হবে। কি কি বিষয়ে উত্তাপ ছড়াবে তা নিয়ে গতকাল বুধবার বিভিন্নস্থানে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ বিষয়ে হাবের সভাপতি ইব্রাহীম বাহার জানান, আমরা সরকারকে বলেছি হজ্ব¡যাত্রীদের কোটা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রাপ্ত কোটা এজেন্সিদের মধ্যে সমহারে বন্টন করে দিতে হবে। অথবা টাকা জমা দেয়ার সময় অনুযায়ী সিরিয়াল নাম্বার দেয়ার জন্য প্রস্তাব করেছি। এসব বিষয়ে আজ বিশেষ সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে জানানোর পর এ বিষয়ে নতুন কোন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে তিনি জানান।
এদিকে হাবের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা চাচ্ছি একটি স্থায়ী সমাধান। আমরা ওআইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনসংখ্যার অনুপাতে কোটা বৃদ্ধি করতে পারি। এবছরই ২০১৮ সালের হজের জন্য ৭০ হাজার হজ্বযাত্রীর প্রাক-নিবন্ধন করা হয়ে গেছে। তাহলে আর আমরা অফিস নিয়ে বসে থেকে কি করবো? আর প্রাক-নিবন্ধন নতুন করে সিরিয়াল করলে এখান থেকে অনেক হজ্বযাত্রী বাইরে চলে যাবে। তখন আবার আরেক জটিলতা সৃষ্টি হবে। এসব বিষয়ে আজকের বিশেষ সাধারণ সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে জানানো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।