২৮ মার্চ ২০১৭, মঙ্গলবার, ১০:৫৬

ময়মনসিংহে মাদ্রাসাশিক্ষককে মারধর

ঝালকাঠিতে প্রধান শিক্ষককে পেটালেন আ.লীগ নেতা

ঝালকাঠিতে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অতিথি ও শিক্ষার্থীদের সামনেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে আওয়ামী লীগের এক নেতা পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববারের এ ঘটনার পর গতকাল সোমবার ক্লাস বর্জন ও মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে।
এদিকে ময়মনসিংহে গতকাল এক মাদ্রাসাশিক্ষককে মারধরের ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক আকন অভিযোগ করেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইউনিয়ন যুবলীগ তাঁর অনুমতি নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে তিনিও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। রোববার বিকেলে অনুষ্ঠান চলার সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির দলবল নিয়ে এসে অনুষ্ঠান আয়োজনে তাঁর অনুমতি নেওয়া হয়নি কেন, জানতে চান। একপর্যায়ে অতিথি ও শিক্ষার্থীদের সামনে তাঁকে মারধর শুরু করেন। হুমায়ুন কবির এই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সদস্য।
প্রধান শিক্ষককে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সকাল ১০টায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে এভাবে মারধর করা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তির অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের নেতা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আমার তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
রাজাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুন অর রশিদ বলেন, মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করছিল। শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পুলিশ অবরোধ তুলে দেয়।
ময়মনসিংহে শিক্ষককে মারধর, বিক্ষোভ
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের কাশিনগর কাটাখালী গ্রামে গতকাল সকালে এক মাদ্রাসাশিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত মো. আবদুস সালাম ওই ইউনিয়নের কালীগঞ্জ বাবুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার গণিতের শিক্ষক।
আবদুস সালাম বলেন, রোববার তিনি তাঁর বড় ভাই সিদ্দিককে নিয়ে কাশিনগর কাটাখালী গ্রামের রুমন মিয়ার ইজিবাইকে চড়ে তাড়াইল যাচ্ছিলেন। কিন্তু রুমন তাঁদের মাঝপথে নামিয়ে দেন। এর প্রতিবাদ করলে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।
ওই শিক্ষক আরও বলেন, এ ঘটনার পর গতকাল সকাল সাড়ে নয়টা তিনি সাইকেলে করে মাদ্রাসায় যাচ্ছিলেন। এ সময় রুমনের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক কাশিনগর কাটাখালী গ্রামের করাতকলের সামনে পথ রোধ করে তাঁকে মারধর করেন। এতে তিনি চেতনা হারিয়ে ফেলেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে নান্দাইল মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সাইফুল ইসলাম ও মামুন মিয়া ঘটনাস্থলে যান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে বাড়িতে গিয়ে রুমনকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর চাচা মো. জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেন, রুমন স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। মাঝেমধ্যে ইজিবাইক চালায়। ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষককে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। এতে শিক্ষক ও তাঁর ভাই রুমনকে চড়থাপ্পড় দেন। শিক্ষকের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা সত্য নয়।
শিক্ষকের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে গতকাল কালীগঞ্জ-তাড়াইল সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1122926/