২২ মার্চ ২০১৭, বুধবার, ৮:৪৪

তিস্তা চুক্তি এবারো অনিশ্চিত : পানিসম্পদমন্ত্রী

সাত বছর ধরে ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তি প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরেও হচ্ছে না বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের কথায়।
শেখ হাসিনার সফরের দুই সপ্তাহ আগে গতকাল ঢাকায় এক গোলটেবিলে তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো সময়সীমা দিতে চাই না। আবার এও বলব না যে, এ সফরেই তিস্তা চুক্তি হয়ে যাবে। তবে আমি আশাবাদী।’ বিডি নিউজ।
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে বহু আশ্বাস দেয়া হলেও তাতে কোনো অগ্রগতি না হওয়ার মধ্যে ৭ এপ্রিল ভারত সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব পানি দিবস উপলে গতকাল আয়োজিত ওই গোলটেবিলে আনিসুল ইসলাম বলেন, ভারতের দু’জন প্রধানমন্ত্রী বলে গেছেন তিস্তা চুক্তি হবে। সম্প্রতি মোদিও তার সফরে বলে গেছেন যে এ চুক্তি হবে।
২০১০ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময়ই তিস্তা চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে তা আটকে যায়।
এরপর ভারতে মতার পালাবদলের পর বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হয়ে ২০১৫ সালে ঢাকা সফরে এলেও সেই জট খোলেনি। আশ্বাস দিয়েই বিদায় নিয়েছিলেন তিনি।
তিস্তা চুক্তি না হওয়ার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প থেকে বরাবরই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের আপত্তিকে বাধা হিসেবে দেখিয়ে আসছে। এ নিয়ে বিজেপিবিরোধী নেত্রী মমতার সাথে তাদের কোনো আলোচনাই ফলপ্রসূ হয়নি।
এবারের সফরে শেখ হাসিনার সাথে মমতাকে একসাথে বসানোর পরিকল্পনা চলছে বলে নয়া দিল্লির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের প থেকে এ চুক্তির জন্য জোর চেষ্টা চালানোর আশ্বাস দিয়ে মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের অধিকার নিয়ে সব সময় কথা বলছি। আমরা ভারতকে গঙ্গার প্রবাহ কমে যাওয়ার কথা জানিয়েছি।
তিস্তা চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, এ চুক্তি আমাদের কোনো ক্রাইসিস থেকে করা হচ্ছে না, বরং সেচের জন্য যেন আমরা পানি ব্যবহার করতে পারি সে জন্য। এটি শুষ্ক মওসুমের জন্য করা হয়নি। দেখা যায় স্বল্পসময়ের জন্য খরা হয়, সে সময় পানি দিতে না পারলে ফসলের অনেক তি হয়। আর সেই ফসলের যাতে কোনো তি না হয় সে কারণেই তিস্তা চুক্তি।
অনুষ্ঠানে গঙ্গা ব্যারাজ নিয়ে ভারতের সাথে আলোচনা নিয়ে সমালোচনার জবাবও দেন আনিসুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গঙ্গা বাঁধ নিয়ে ভারতের সাথে আমাদের কথা হচ্ছে। দুই দেশের যৌথ কমিটিও কাজ করছে। এ বাঁধ নিয়ে আমরা পুনঃপরীা করছি, যাতে ভবিষ্যতের সমস্যাগুলোর বিষয়ে আমরা অবগত হতে পারি। গঙ্গা ব্যারাজের দূরত্ব ১৬৪ কিলোমিটার, যার ৮২ কিলোমিটারের দুই পাড় বাংলাদেশের মধ্যেই; বাকি ৮২ কিলোমিটারের একপাড় বাংলাদেশে, অন্যপাড় ভারতে। অর্থাৎ এ বাঁধের যে অংশে আমরা পানি সংরণ করব তার চারভাগের একভাগ ভারতে। সে জন্য ভারতের সাথে আলোচনা করতে হচ্ছে।
গঙ্গা বাঁধ না করলে দেশের দণিাঞ্চলে আর্সেনিক সমস্যা, বাস্তুসংস্থান সমস্যা, সুন্দরবনের সমস্যা, লবণাক্ততা সমস্যা বাড়বে বলে দাবি করেন পানিসম্পদমন্ত্রী।
‘বর্র্জ্য পানি ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এ গোলটেবিলে পানি সংরণের ওপর জোর দেন তিনি।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/205729