২০ মার্চ ২০১৭, সোমবার, ৮:০৯

গাইবান্ধায় সংবাদ সম্মেলন

ডেপুটি স্পিকারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ। গতকাল রোববার বিকেলে গাইবান্ধা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামশীল আরেফিন লিখিত বক্তব্যে এসব অনিয়ম-দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে সামশীল আরেফিন বলেন, ‘১৭ মার্চ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে গেলে ডেপুটি স্পিকারের সমর্থকেরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র, হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়ারেছ আলী প্রধানের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে।’
সামশীল আরেফিন বলেন, ডেপুটি স্পিকার জাতীয় পার্টি ছেড়ে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই তিনি পুরোনো দলীয় সহযোগী ও আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এমনকি সরকারের সব উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ না করে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, ডেপুটি স্পিকার সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার প্রায় ১৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ওই সিন্ডিকেটের সদস্যদের সভাপতি বানিয়ে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেন। টিআর, কাবিখা, কাবিটা, ভিজিএফ, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, এমনকি মসজিদ-মন্দির, ঈদগাহ মাঠ, কবরস্থানের সংস্কার ও জেলা পরিষদ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করছেন।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, সদ্য সমাপ্ত জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ-শামস-উল আলমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতাউর রহমানের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে তাঁকে বিজয়ী করতে সহায়তা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি স্পিকারের এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণে দলের সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে দাবি জানানো হয়। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম ও মোসলেম উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মশিউর রহমান; ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম সেলিম পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, দপ্তর সম্পাদক সুমন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম জাভেদ ও মাহমুদ হাসান; উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মামুন মিয়া প্রমুখ। এ ব্যাপারে সব বিষয়ে বক্তব্য জানতে ফজলে রাব্বী মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
তবে ডেপুটি স্পিকারের এপিএস তৌফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৭ মার্চ স্যারের বক্তব্য চলাকালে তারা (সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী) বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে গিয়ে আমাদের লোকজনের ওপর চড়াও হয়। তারাই লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের লোকজনকে মারধর করে।’ টিআর, কাবিখা আত্মসাৎ ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে এপিএস বলেন, ‘ওরা সব সময় স্যারের নেগেটিভ সাইডটা বলে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তারা এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছে।’

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1114054/