১২ এপ্রিল ২০১৭, বুধবার, ৬:৩৮

ভারত সফর শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অসংলগ্ন ও অস্পষ্ট

ভারত সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে ভারতের মুখাপেক্ষী করে দিয়েছেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে গত ১১ এপ্রিল বিকেলে গণভবনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে যে অসংলগ্ন ও অস্পষ্ট বক্তব্য প্রদান করেছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ১২ এপ্রিল প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “ভারত সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে যে অসংলগ্ন হাস্যকর বক্তব্য প্রদান করেছেন তাতে জাতি আশাহত ও বিচলিত।

দেশবাসী আশা করেছিল তিনি ভারত সফর করে বাংলাদেশের জনগণের বহু প্রত্যাশিত তিস্তার পানি বন্টন চুক্তিসহ বাংলাদেশের অন্যান্য ন্যায্য পাওনা আদায় করে দেশে প্রত্যাবর্তন করবেন। কিন্তু দেশবাসী উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ্য করছে যে, তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি করার পরিবর্তে ভারতের সাথে প্রতিরক্ষাসহ ১১টি চুক্তি ও ২৪টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে বাংলাদেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে ভারতের হাতে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তুলে দিয়ে দেশে ফিরেছেন। এসব চুক্তির বেশীর ভাগ জুড়ে রয়েছে প্রতিরক্ষা বিষয়। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি ভারত থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ, মতবিনিময় ও সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের কথা বলেছেন। তাতে জাতির বুঝতে বাকি থাকেনি যে, তিনি বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে ভারতের মুখাপেক্ষী করে দিয়েছেন।

তিনি হতাশা ও অতৃপ্তির কথা অস্বীকার করলেও তার চেহারায় হতাশার ছাপ লক্ষ্য করেছে দেশের জনগণ। তিনি সময় হলে চুক্তি প্রকাশের কথা বলে চুক্তি প্রকাশ করার ব্যাপারে অনীহাই প্রকাশ করেছেন। এতে জনমনে গভীর সন্দেহ ও আতংক দানা বেধেছে। প্রতিরক্ষা চুক্তির মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিপূর্ণভাবে জনগণের জানার অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। এ অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করার ক্ষমতা কারো নেই। জনগণ কোন টালবাহান দেখতে চায়না। দেখতে চায় এ সমস্ত সমঝোতা স্মারক ও চুক্তিতে কী আছে? সরকার যদি জনগণের স্বার্থে চুক্তি করেই থাকেন তাহলে এত টালবাহানা কেন?

আমরা সকলের সাথে বন্ধুত্ব চাই, কারো সাথে শত্রুতা নয়। কিন্তু বন্ধুত্ব হতে হবে দেশের স্বার্থকে রক্ষা করে এবং সমমর্যাদার ভিত্তিতে। সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি কিছু আনতে যাইনি, বন্ধুত্ব করতে গিয়েছিলাম।’ জাতির সব কিছু ছেড়ে দেওয়ার নাম বন্ধুত্ব নয়। প্রকারান্তরে একথা বলে তিনি জাতিকে দারুনভাবে উপহাস করলেন। এ কথায় তিনি লজ্জিত না হলেও পুরো জাতি লজ্জিত। দেশের একজন প্রধানমন্ত্রীর মুখে এ ধরনের অসংলগ্ন কথা মানায় না। আসলে তিনি সবই দিয়ে এসেছেন। কিছুই আনতে পারেননি। তার এ সফর প্রায় পুরোপুরি ব্যর্থ।

দেশ ও জনগণের স্বার্থের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অতীতে যেমন কেউ রেহাই পায়নি, এখনো পাবেনা। অতএব, কালবিলম্ব না করে সমস্ত সমঝোতা স্মারক ও প্রতিরক্ষা চুক্তির যাবতীয় বিষয় জনগণের সামনে পেশ করার জন্য আবারো আমরা জোরালো দাবি জানাচ্ছি।”