৩ নভেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার, ৩:১৭

পাহাড়ি অপাহাড়ি ভেদরেখা তুলে দিয়ে সমান নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করে সরকারকে সংকট সমাধানের উপায় বের করতে হবে

পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন আইন সংশোধন বিল পুনঃবিবেচনা পূর্বক (বিতর্কিত ধারা সমূহ) বাতিল করে পার্বত্য অঞ্চল পাহাড়ি, অপাহাড়ি উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ করে ভূমি আইন প্রণয়ণের আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ২রা নভেম্বর নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেনঃ-

“পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ সমস্যা দীর্ঘ দিনের। এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিগত দিনে ফলপ্রসূ কোন পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করে নাই। ২০০১ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন আইন, ২০১৬ সালে অধিকতর সংশোধন কল্পে আইনটি মহান জাতীয় সংসদে পাস করা হয়। এই আইনে অপাহাড়িদের দীর্ঘদিনের ভূমি বন্দোবস্তিকৃত বৈধ জমির মালিক, নির্মাণাধীন ঘরবাড়ি, চাষাবাদের জমি, ভিটে-বাড়ি বেদখল হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আবারও অশান্ত হয়ে উঠার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। পাহাড়ি অপাহাড়ি বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করার খুবই আশঙ্কা রয়েছে। উপজাতিদের উচ্ছেদকৃত জমি, ঘরবাড়ি, ভিটে পুনঃরায় ফেরত দেয়ার আইন বলবৎ রেখে (২০০১ সালের ৫৩নং আইন) সংশোধন করা একান্ত প্রয়োজন। কমিটির মধ্যে ৩ জন নৃ-গোষ্ঠির সদস্য ছাড়াও অপহাড়িদের ১জন সদস্য নিয়োগ করা প্রয়োজন। ধারা-৭, ধারা-১১, ধারা-২০, ধারা-১৯ নং পূর্ণ সংশোধনের আহবান জানাচ্ছি। সম্পদ সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদের অনাহরিত রত্ন ভান্ডার পার্বত্য চট্টগ্রাম।

পাহাড়ি অপাহাড়ি ভেদরেখা তুলে দিয়ে সমান নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করে সরকারকে এই সংকট সমাধানের উপায় বের করতে হবে। সরকারকে আন্তরিকতা ও বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করতে হবে। উপজাতি, চাকমা, মারমা সহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি যাতে পরস্পর সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে পারে সেই লক্ষ্যেই সরকারকে এগিয়ে যেতে হবে। অপাহাড়ি জনগোষ্ঠি যাতে অধিকার বঞ্চিত না হন তেমনি নৃ-গোষ্ঠি বা পার্বত্য উপজাতির ন্যায্য দাবিকেও উপেক্ষা করা যাবে না। যারা অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, জীবনমান অনুন্নত, শিক্ষা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে বঞ্চিত তাদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

দীর্ঘদিন ধরে উভয় পক্ষ ভয়-ভীতি ও আতংকের মধ্যে বসবাস করে আসছে। এতে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। লংঘিত হচ্ছে মানবাধিকার। তাই উভয় পক্ষের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি আইন প্রণয়ন করার জন্য আমি জোর দাবি জানাচ্ছি। দেশের মানুষ হানাহানি নয়, শান্তি চায়।”