১ জুলাই ২০১৭, শনিবার, ১:৩১

দেশের ব্যাংকিং খাতের নাজুক অবস্থায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

দেশের ব্যাংকিং খাতের শোচনীয় নাজুক অবস্থার জন্য বর্তমান সরকার এবং বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী দায়ী

দেশের ব্যাংকিং খাতের নাজুক অবস্থায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আজ ১ জুলাই প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকারী দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সীমাহীন লুট-পাটের কারণেই বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে এক নাজুক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অতি সম্প্রতি জাতীয় সংসদে প্রদত্ত বক্তব্যে দেশের ব্যাংকিং খাতের নাজুক অবস্থার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। কিন্তু দেশবাসীর প্রশ্ন দেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান নাজুক অবস্থার জন্য দায়ী কে? অর্থমন্ত্রী কী এ দায়িত্ব এড়াতে পারেন? দেশের অর্থনীতিবিদগণ এবং দেশের জনগণ মনে করেন দেশের ব্যাংকিং খাতের শোচনীয় নাজুক অবস্থার জন্য বর্তমান সরকার এবং বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী দায়ী। ব্যাংকিং খাতের লুটপাট এবং শেয়ার বাজার কেলেংকারীর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকার ও সরকারের অর্থমন্ত্রী কিছুতেই এড়াতে পারেন না।

বর্তমান সরকারের আমলে বেসিক, সোনালী, অগ্রণী, রূপালী ও বিডিবিএল ব্যাংকের সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট এবং রিজার্ভ ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনা দেশবাসী সকলেই অবগত আছেন। রিজার্ভ ব্যাংকের টাকা চুরি ও অন্যান্য ব্যাংকের টাকা লুটপাটের ঘটনা তদন্তের জন্য নামকাওয়াস্তে কমিটি গঠন করা হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়নি। উপরন্তু লুটপাটে ও চুরির ঘটনায় জড়িত সরকারী দলের রাঘব-বোয়ালদের বাঁচানোর জন্য তদন্ত মধ্যপথে থামিয়ে দিয়ে ঘটনা ধামা চাপা দেয়া হয়েছে বলে জনগণ মনে করে। ব্যাংক লুটপাট ও রিজার্ভ চুরির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচার না করার কারণেই দুর্নীতিবাজ লুটেরা মহল ব্যাংকগুলিকে লুটপাট করে ফোকলা করে ফেলেছে। উপরন্তু একই পরিবারের ৪জনকে বেসরকারী ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগ করার আইন করে দুর্নীতিকে আরো উৎসাহিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনগণের উপর বৈধ-অবৈধ পন্থায় ট্যাক্সের বোঝা আরোপ করে সেই অর্থ থেকেই তিনি ভর্তুকি দিতে চাচ্ছেন। এটি জনগণের সাথে সুস্পষ্ট প্রতারণার শামিল।

ব্যাংকিং খাতসহ দেশের গোটা অর্থনীতিই এক নাজুক অবস্থায় পতিত হয়েছে। দেশবাসীর প্রশ্ন এ অবস্থা সৃষ্টির পরেও অর্থমন্ত্রী এখনো স্বপদে আছেন কিভাবে? জাতীয় সংসদ সদস্যগণ তার পদত্যাগের দাবী করা সত্ত্বেও তিনি স্বপদে বহাল তবিয়তে আছেন। সকল দায়-দায়িত্ব কাধে নিয়ে তার অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।

ব্যাংকিং খাতের নাজুক অবস্থা সৃষ্টির কারণ তদন্ত করে এ জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে ব্যাংকিং খাতকে দুর্নীতি মুক্ত করার লক্ষ্যে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”